আমার বিয়ে কবে হবে


 আমার বিয়ে কবে হবে? আমার বিয়ে কার সাথে হবে? এটা কেউ কখনো বলতে পারে না বা পারবে না। কেননা, কথায়  আছে"জন্ম মৃত্যু বিয়ে সব বিধাতা নিয়ে"। হ্যাঁ, সত্যি তাই জন্মের বহু কাল আগে থেকেই মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভাগ্যে কি আছে??কি হবে কিভাবে হবে ?তা নির্ধারণ করে রেখেছে। কে? কখন? কোথায় জন্মগ্রহণ করবে? কার সঙ্গে কখন কার বিয়ে হবে ?কে কিভাবে মারা যাবে? তাও মহান আল্লাহ তায়ালা  তাদের ভাগ্যে লিখে রেখেছে। আপনার বিয়ে না হলে কি করা উচিত তা আজকে আমরা এই পোস্টে লিখব।

পেজ  সূচিপত্রঃ আমার বিয়ে কবে হবে

আমার বিয়ে কবে হবে  আমার বিয়ে কেন হচ্ছে না

আমাদের সকলের জীবনে বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা মহান রব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মুসলিম জাতির ছেলে ও মেয়েদের জন্য ফরজ করেছেন। কিন্তু আপনার বা আমার বিয়ে কেন হচ্ছে না আমার বিয়ে কখন হবে আমার বিয়ে কবে হবে কিভাবে হবে  আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। পৃথিবীর সৃষ্টির বহুকাল বা বহু যুগ আগে মহান আল্লাহ তায়ালা আশরাফুল মাখলুকাত সহ গোটা বিশ্বের 

পশু পাখি প্রাণী সবকিছুর জন্ম মৃত্যু নির্ধারণ করে রেখেছে তেমনিভাবে বিয়েটাও নির্ধারিত করে দিয়েছে। তাছাড়া এই পৃথিবীতে মহান আল্লাহ তায়ালা যত নবি -রাসুল  পাঠিয়েছিলেন তারা সবাই বিবাহিত ছিলেন।
যেমনভাবে পৃথিবীতে মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুম ছাড়া একটি গাছের পাতা নড়ে না। তেমনি ভাবে আমার বিয়ে কেন হচ্ছে না আমার বিয়ে কবে হবে মহান আল্লাহ যখন হুকুম হবে তখন আপন আপনিই হবে। ইনশাল্লাহ।


বিয়ে না হলে কি করা উচিত 

যেকোনো ব্যক্তি সে পুরুষ হোক বা নারী বিয়ের আগ্রহ কমবেশি সবারই থাকে। কিন্তু সেই আগ্রহ বা প্রচেষ্টা থাকার পরও যদি কোন কারনে বিয়ে না হয় তাহলে সে তার জন্য গুনাহগার হবে না ।কেননা সে যথা সাধ্য চেষ্টা করেছে। এই সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা বলেনঃ

" আল্লাহ কারো উপর তার সাধ্যের বাহিরে কোন কাজের দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না।" (সূরা বাকারাহঃ আয়াত ২৮৬)
তবে কোন মেয়ে যদি তার ক্যারিয়ার গড়ার জন্য লেখাপড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য  বিয়েতে আগ্রহ না দেখায় আর পরবর্তীতে বিয়ে না হয় অথবা বিয়ের প্রতি অবহেলা দেখায় তবে সে ব্যক্তি গুনাহ্গার হবে।

 কেননা বিয়ে একটি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিধানও। যাই হোক অনেক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টার পরও যদি বিয়ে না হয় তবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে ধৈর্য ধরতে হবে এবং গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য নফল রোজা রাখা নেকির কাজে সব সময় অতিবাহিত করা মানুষের সেবাও  জ্ঞান চর্চা  করা আল্লাহর পথে দাওয়াত ও নফল নামাজের মাধ্যমে নিজের সময়গুলো অতিবাহিত করতে হবে।

বিয়ে করতে কি প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হয়

বিয়ে হচ্ছে চরিত্র রক্ষার হাতিয়ার। কেননা বিয়ের মাধ্যমে একজন পুরুষ বা একজন নারী তার  চরিত্রকে ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারে। আল্লাহ তার বান্দাকে অসংখ্য ফিতনা ক্ষয়ক্ষতি নানা রকম অসুখ-বিসুখ ও সমস্যা থেকে মুক্তি করেন এই বিয়ের কারণে। তাই সক্ষমতা থাকলে তাদের বিয়ে করাই ভালো। রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর বয়স যখন ২৫ বছর তখন তিনি হযরত খাদিজা (রাঃ) বিয়ে করেন। তখন খাদিজা রাদিয়াল্লাহর বয়স ছিল ৪০ বছর।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিয়ের জন্য পুরুষের মূল্য বেশি বছর এবং মেয়েদের বয়স ১৮ বছর। এর চেয়ে  কম বয়সে বিয়ে হলে সেটা বাল্যবিবাহ হিসেবে গণ্য হবে। কিন্ত কিন্তু মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ও হাদিসে এ বিষয়ে কোনো সংখ্যার উল্লেখ করেনি ।তবে প্রাপ্তবয়স্ক এবং দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত হলেই বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছে।

 কুরআনে বলা হয়েছেঃ তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহ হীন তাদের বিয়ে করিয়ে দাও যদি তারা দরিদ্র হয় তবে আল্লাহর আল্লাহতালা তাদের নিজ দায়িত্বে অভাবমুক্ত করবেন।( সূরা আন- নূরঃ ৩২)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে। কারণ, এটির দৃষ্টি সংযত রাখে এবং পবিত্রতা রক্ষা করে। আর যার সামর্থ্য নাই, সে যেন রোজা রাখে ।এটি তার জন্য ঢাল স্বরূপ। (সহি বুখারি, হাদিস ৫০৬৫)

বিয়ে একটি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সঠিক বয়স মানসিক পরিপক্কতা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল এবং জীবন সাথীর সঙ্গে বোঝাপড়া সব বিষয়ে সফল করার প্রধান উপাদান হচ্ছে বিয়ে ।তাই দাম্পত্য জীবন শুরু করার আগে ব্যক্তি এবং সমাজে এই বিষয় নিয়ে আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

বিয়েতে উভয় পক্ষের মতামতের প্রয়োজন আছে কি

 আমার বিয়ে হবে কবে কার সাথে হবে কিভাবে হবে সেটা মহান আল্লাহর  হাতে। যখন আল্লাহ তাআলার হুকুম হবে তখন সকল কিছুই সম্ভব ।কেননা আল্লাহর বিনা হুকুমে গাছের একটি পাতাও নড়ে না। আপনি হয়তো ভাবছেন বিয়েতে এক পক্ষের মতামত হলেই হবে কিন্তু না বিয়েতে উভয় পক্ষের মতামতের প্রয়োজন আছে কেননা উভয় পক্ষ সম্মতি ছাড়া বিয়ে বৈধ হয় না । আর বিয়ে হচ্ছে একটি
 সামাজিক ও পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বিয়ের ক্ষেত্রে নারী নিজে পুরুষকে প্রস্তাব দেওয়া সুন্নত। ইসলামে প্রস্তাব দিয়ে বিয়ে করা সুন্নতের অন্তর্গত। বিয়ের ক্ষেত্রে মানসিক বোঝাপড়া এবং বাহ্যিক বিষয়বলি প্রাধান্য দেওয়া উচিত। কারণ চরিত্র ভালো না হলে একজন পুরুষ ও নারী তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আবদ্ধ হয়ে দাম্পত্য জীবন সুখের করে গড়তে পারেনা। তাই সে ক্ষেত্রে শুধু সৌন্দর্য নয় চরিত্র সুন্দর কিনা পুরুষ মানুষ ইনকাম করে কিনা সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে কিনা এবং একজন নারী সে পর্দাশীল কিনা সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে কিনা এবং তার চরিত্র ঠিক কিনা তাও দেখাও জরুরি।

হাদিসে বর্ণিত আছেঃ হযরত আয়েশা( রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, আমি তোমাকে স্বপ্নের মধ্যে দেখেছি, একজন ফেরেস্তা তোমাকে রেশমি চাদরে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে এসে বলল,  এই হচ্ছে আপনার স্ত্রী এরপর আমি তোমার মুখমন্ডল থেকে চাদর  খুলে ফেলে তোমাকে দেখতে পেলাম। তখন আমি বললাম , যদি স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে , তাহলে অবশ্যই তা বাস্তবায়িত হবে। আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭ ৪৭

দাম্পত্য জীবনকে সুখময় স্থায়ী করার জন্য বিয়ের পূর্বে কনেকে  দেখে নেয়া উচিত বলে ইসলামে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ।এ পর্যায়ে সর্বপ্রথম দলিল হচ্ছে কোরআন মাজিদের নিম্নোক্ত বাণী -

'তোমরা বিয়ে কর সেই স্ত্রীলোকে যাকে তোমার ভালো লাগে'।( সূরা আন নিসাঃ আয়াতঃ ৩)

৪০ দিনের মধ্যে বিয়ে হওয়ার আমল

আমার বিয়ে হবে কবে -আপনার বিয়ে হবে কার সাথে। বিয়ে ছাড়া আপনি আপনার আমল ঈমান রক্ষা করতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে যেসব জায়গায় বেপর্দা মেয়েকে দেখার কারণে আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না আপনার মনের ভিতরে অনেক আজেবাজে চিন্তা ঘোরাফেরা করছে সেগুলো আগে বন্ধ করেন। চোখের জেনা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। কেননা চোখের যেন এক প্রকার পাপ। যখন আপনি কোন কিছুতেই আপনার ঈমান ও আমল ঠিক রাখতে পারছেন না তখন আপনার জন্য বিয়ে করাটাই হবে উত্তম পন্থা।

বিয়ের মতো পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হলে  আপনার দুইটা লাভ। একটা লাভ হচ্ছে আপনার চোখে হারাম যে সকল বস্তু আছে সে সকল  বস্তু থেকে বাঁচাবে। আরেকটি হচ্ছে  আপনার যে প্রাইভেট পার্টস আছে সেগুলোকে গুনাহ থেকে বাঁচাবে বিয়ে। সুবহানাল্লাহ। আপনি কি  দ্রুত বিয়ে করতে চান তবে আপনি বেশি বেশি পাঠ করবেন আস্তাগফিরুল্লাহ , আস্তাগফিরুল্লা্‌ আস্তাগফিরুল্লাহ হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম এই দোয়া বেশি বেশি পাঠ করবেন আপনার বিয়ে খুব দ্রুত হবে ইনশাআল্লাহ।

যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার করে সেই ব্যক্তি আল্লাহর কাছে যাই চাইবে আল্লাহ তার মনের সকল আশা পূর্ণ করবে ইনশাআল্লাহ । আল্লাহ তার মনের সকল  চাওয়া পাওয়া পূর্ণ করবে।  ইস্তেগফারের পাশাপাশি সে ব্যক্তি সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে। কোন ব্যক্তি যদি প্রত্যেক ফজর নামাজের পর সূরা ইয়াসিন পাঠ করে তবে সারাদিন তার কোন বিপদ আসবে না।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

Md. Abir Hossain
Md. Abir Hossain
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও অর্ডিনারি আইটির সিনিয়র সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার। তিনি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন। ৫ বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি শিক্ষার্থীদের অনলাইনে সফল হতে সহায়তা করে যাচ্ছেন।